গল্প । আষাড় ১৪৩২



অতসীর একটি দিন 











সমরজিৎ চক্রবর্তী

আদান, পশ্চিমবঙ্গ


 

রোজই কাক দুটো ডাকে আর দাদু ছুটেছুটে এসে বিস্কুট গুঁড়ো করে দিয়ে যায়। অতসী বোঝে ঠাম্মার ভয়ে দাদু হাঁপাতে হাঁপাতে ছুটে আসে। কিন্তু ভারি অদ্ভুদ ব্যাপার, ক’দিন ধরে সে লক্ষ্য করেছে, কাক দুটো খুব ভীতু। ঘাড় লম্বা করে খালি চারপাশ তাকায়, আর চড়ুই, বুলবুল, শালিক আর ছাতারে পাখিগুলো নিমেষে সব শেষ করে দেয়। 

অনেকক্ষণ দেখার পর কাক দুটো যেই আসে অমনি ওই বুলবুলিটা ঝোঁটন নেড়ে তেড়ে যায়। ভয়ে কাক দুটো উড়ে গিয়ে সামনের লাইটপোস্টে বসে আর ঘাড় লম্বা করে। হাসি পেয়ে যায় অতসীর। ওইটুকু একটা বুলবুলির ভয়ে... বুলবুলিটা মনে হয় ছেলে। মা বলে ছেলেদের রোয়াব বেশি

কী যেন মনে হল অতসীর। বারান্দায় বেরিয়ে এল। আজ তো গাড়ি আসেনি, মনে হয় ঘরে আছে। বড়মাকেও দেখছি না

টুক টুক করে অতসী পাশের সিঁড়ি বেয়ে উঠে এলো বড়জেঠুর পড়ার ঘরে। দরজার পাশে দেওয়ালের আড়াল থেকে লুকিয়ে দেখল দাদু কথা বলছে জেঠুর সঙ্গে। বারবার টুকি দিয়ে দেখতে দেখতে একবার একটু বেশি ঝুঁকে পড়েছিল, জেঠুর চোখে চোখ পড়ে গেল। হেসে জেঠু বললে, ওখানে কেন? ভেতরে আয়

তুই এখানে এয়েছিস! বলে উঠল দাদু, কী করি বলত ওকে নিয়ে... ওই বা কী করবে সারাদিন একা একা...

কিছু করতে হবেনা। ও থাক আমার কাছে। আয়। শুনছো, তোমার ছুটকি এসেছে

দাদু একবার জেঠুর দিকে একবার তার দিকে তাকাল। ফোকলা দাঁতে সুন্নর একটা হাসি ভেসে উঠল দাদুর মুখে। আরামের হাসি

দাদু চলে যেতেই জেঠু বললে, কি রে অঙ্ক আর বাংলা এবার দিয়েছিস ভাল করে? মায়ের মার মনে আছে তো! 

অতসী বড়বড় চোখকরে তাকাল জেঠুর দিকে। দু হাতের আঙুলগুলো নিজেদের মধ্যে খেলা করতে লাগল। একবার আঙুলের দিকে একবার জেঠুর মুখের দিকে তাকালো, তারপর ঘাড় নাড়ল। 

 

সেকেন্ড টার্মিনাল পরীক্ষায় অঙ্ক আর বাংলায় একশোয় একশো পায়নি বলে মা চুলের মুঠি ধরে শরীরে সমস্ত রাগ এলোপাথারিভাবে উগরে দিচ্ছিল, নীরবে দাঁড়িয়ে অতসী হজম করছিল, কিন্তু একসময় আর পারেনি। ছুটে পালিয়েছিল দাদুর কাছে। দাদু দু হাত লম্বা করেও বাঁচাতে পারেনি। প্রবল আক্রোশে মা দাদুকে টপকে সজোরে চুলের মুঠি ধরে হিড়হিড় করে টানতে টানতে এনে দেওয়ালে মুখ ঠুকে দিয়েছিল। কপালটা ফুলে গিয়েছিল, ঠোঁট ফেটে রক্ত বেরুচ্ছিল। কোনরকমে একটু ফাঁক পেতেই পড়িমড়ি করে ছুটেছিল বড়মার কাছে। বড়মা ঘরে ছিল না। জেঠু কমপিউটারে কী সব লিখছিল। লুকিয়ে পড়েছিল জেঠুর চেয়ারের পাশে। চোখে পড়তেই অবাক হয়ে গেছিল জেঠু! কে এমন অবস্থা করল তোর! সে কি মানুষ! বলেই কোলে তুলে নিয়েছিল। একটা জমাট বাঁধা হাওয়া বেরিয়ে এসেছিল অতসীর বুক থেকে। আর কোনো ভয় নেই। মাও পিছু পিছু ছুটে এসেছিল কিন্তু জেঠুকে দেখেই থমকে গিয়েছিল। তারপর ফিরে গিয়ে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করছিল। একটু একটু ভেসে আসছিল, কেউ যখন তার ছেলেমেয়েকে শাসন করে আমি সোহাগ দেখাতে যাই না

কপালে মলম লাগিয়ে দিয়েছিল জেঠু। কিন্তু ঠোঁটের রক্ত পড়া বন্ধ হচ্ছিল না। বড়মা একমুঠো চিনি এনে মুখে দিতেই রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে গেলো। ঠাম্মা দাদু ছুটে এলো। মা তখনও চিৎকার করে যাচ্ছিল। জেঠু দরজা জানলা বন্ধ করে দিয়ে টিভি চালিয়ে দিল। তুই আর যাবি না। থাকবি আমার কাছে। ঠাম্মা বললে, আর একটু ভাল করে লিখতে পারিসনি! জেঠু বললে, কত পেয়েছিস অঙ্কে?

আটানব্বুই। বাংলায় পঁচানব্বুই

অনেক পেয়েছিস। আমি তো তিরিশ পেয়েছিলুম। তোকে আর ওদের কাছে যেতে হবে না

 

তা হলে বলছিস পরীক্ষা ভালো দিয়েছিস। আচ্ছা, তুই দেখেছিস আজ কাক দুটো বিস্কুট খেয়েছিল! আর কি কি পাখি এসেছিল? আজ কিন্তু একটা নতুন পাখি এসেছিল। 

অতসী বললে, টিয়াপাখি। আরও একটা এসেছিল, দোয়েল...

দোয়েল!! ওটা আমি দেখিনি তো। শোন, বলে জেঠু ড্রয়ার টেনে একটা সাদা কাগজ আর পেন্সিল দিয়ে বললে দশ লাইনে রচনা লেখ দেখি ওই পাখিগুলোকে নিয়ে। তারপর একটা মজা হবে হেব্বি... 

অতসী কাগজ পেন্সিল নিয়ে চলে যাচ্ছিল। জেঠু বললে অত ঘুরে যেতে হবেনা। এদিকে আয়

জেঠুদের শোবার ঘরের ভেতর একটা বন্ধ দরজা আছে। সেটা খুলে দিয়ে বললে, এখান দিয়ে যা। পড়ার টেবিলে বসে যেমন দেখেছিলি সেইরকম বসে লিখবি। দরজা খোলা রইল। এখান দিয়ে চলে আসবি। 

জেঠু চলে যেতেই অতসী দরজাটা টেনে বন্ধ করে দিল। এখান দিয়ে যে বড়মার ঘরে যাওয়া যায় সেটা জানত না। মাকে এখানে মাঝেমধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছে চেয়ারটা টেনে নিয়ে বসল সে। আধ ঘন্টা পর এল জেঠুর কাছে। জেঠু তো লেখা পড়েই লাফিয়ে উঠল, দারুন লিখেছিস। কাক দুটো সত্যিই বোকা আর ভীতু ব আচ্ছা মনে কর, কাক দুটো ওই পাখিগুলোর জন্যই চিল্লা করে। ওদের খাওয়াতেই ওর আনন্দ। ওদের ঝোঁক বাড়ানোর জন্যই মাঝেমাঝে ডিজাইন করে। যাকগে, তোর মনে যা হয়েছে তাই লিখেছিস। তবে হেপ্পি হয়েছে, খালি দু একটা জায়গায়, বলে কাটাকুটি করে শব্দগুলো আগে পিছু বসিয়ে দিল। তারপর বললে, যা চট করে তোর খাতায় লিখে চলে আয়। এক জায়গায় যাব দারুন মজা হবে। আমার কাগজটা কিন্তু ফেরত আনবি...

 

অতসীকে দেখেই দাদু ছুটে এল। তুই এয়েছিস! ওকে কেন নিয়ে এলি বড়খোকা! আজ ওর একটাও হাড় আস্ত থাকবে না

এমন করে বলছ কেন বাবা! কার ঘাড়ে কটা মাথা আছে আমিও দেখব এই তুই যা। যা মন চায় কর। 

ভয়ে গুটিয়ে ছিল অতসী। জেঠুর প্রশ্রয়ে মনটা পতঙ্গের মত হয়ে উঠল। দু হাত ছড়িয়ে মাঠের আল ধরে ছুটতে শুরু করল। যে দিকে চোখ যায় সবুজ আর হলুদে ভরা। শীতের সোনালী রোদ গায় মেখে মনটা যেন হাল্কা হয়ে গেল অতসীর। সরষে গাছগুলো ওর সঙ্গে কথা বলতে চায়। ছুটতে ছুটতে দাঁড়াল সে। জড়িয়ে ধরল এক বুক সরষে গাছ। হলুদ ফুলের রেণু চোখে মুখে নাকে উছলে উঠল। আহ্‌ কি সুন্দর! চুমা দিয়ে ভরিয়ে দিল গাছগুলোকে। তারপর আবার ছুটল। চোখে পড়ল একটা বড় আলু মাটি থেকে বেরিয়ে আছে। পিছন ফিরে চিৎকার করল, বড়জেঠু বড়জেঠু...। শুনতেই পেল না জেঠু। না পাকগে দূরে কতগুলো লোক থালায় করে জল ছেঁচে জমিতে দিচ্ছে। ছুটল সেদিকে। আলের পাশে সরু নালার মত করা। জমিতে জল আসছে সেই নালা দিয়ে। তাকে দেখেই একজন বললে, অ্যাই তুই কোত্থেকে! কাদের বাড়ির? অতসী সোজা আঙুল তুলে ছোট হয়ে যাওয়া বড়জেঠুকে দেখাল। লোকটি বললে, ও তুই বামুন বাড়ির। অতসী ঘাড় দোলালো। তারপর আলের ওপর বসে পড়ল। জলে পা ডুবিয়ে খেলতে লাগল। আহ্‌ কি ঠান্ডা! 

লোকটি বলল, ঠান্ডা লেগে যাবে উঠে পড় 

অতসীর বয়েই গেছে তার কথা শুনতে। হাতের আধ খাওয়া ক্যাডবেরিটা পাশে রেখে ঝুঁকে পড়ল জলের ওপর। হাত দিয়ে জল ছুঁড়ে খেলতে শুরু করল। ইঃ ছোট্ট একটা মাছ। কোত্থেকে এল...! আচ্ছা জলটা আসছে কোনদিক থেকে! জলের ধারা দেখে ছুটল সেদিকে। ক্ষাণিক যেতেই মনে পড়ল ক্যাডবেরিটা নিতে ভুলে গেছে। ফিরে এল ক্যাডবেরি নিতে। তারপর আবার ছুট। বেশ কিছুটা ছোটার পর দেখতে পেল দাদা, বড়জেঠুর ছেলে, বন্ধুদের সঙ্গে ঘুড়ি ওড়াচ্ছে। এই দাদা!

তুই! কার সঙ্গে এলি? ভিজলি কি করে?

জেঠুর সঙ্গে।       

বাবা অফিস যায়নি!

না। এই নে, বলে হাতের আধ খাওয়া ক্যাডবেরিটা এগিয়ে দিল। দাদাও ক্যাডবেরিটা নিয়ে বেমালুম মুখে চালান করে দিল। আমাকে একটু দে না ওড়াই। দাদা কোন পাত্তা দিল না। বললে, ভুতোর ঘুড়ি। তারপরেই বললে, একটা জায়গায় যাবি

কোথায় রে দাদা...চল্‌ চল্‌...

ভুতোকে ঘুড়ি দিয়ে দু ভাইবোনে ছুটে চলল মাঠের আল বেয়ে।। অনেক দূর আসার পর থামল। সামনে চৌবাচ্ছা মতন। তা থেকে হু হু করে জল বেরুচ্ছে। এটা কি রে দাদা? অপার বিস্ময়ে শুধাল অতসী। 

সবজান্তা বিজ্ঞের মতন দাদা বললে, এটা জানিস না! ছো! সত্যি তুই না একটা যা তা। এটা দিয়ে সব মাঠে জল যায়। যার যখন দরকার সে তখন নালির মুখে কাদা দিয়ে নিজের দিকে করে নেয়

আচ্ছা আমাদের জমিতেও এখান থেকে জল যায়! দাদা উত্তর দেবার আগেই অতসীর ছোট্ট মন বিস্ময়ে ভরে উঠল। এ কোথায় তারা এসে পড়েছে! চারিদিকে ধূ ধূ করছে সবুজ মাঠ। ভয়ে ভয়ে দাদার হাত ধরে বললে, এই দাদা আমাদের জমিটা কোথায় রে! কিছু তো চিনতে পারছি না। জেঠু দাদু কোথায়? তুই চিনতে পারবি? হারিয়ে যাব না তো...

দাদা বললে, যেমন ছুটে এসেছিলাম তেমন ছুটে চলে যাব। 

ঠিক বলছিস তো!

হ্যাঁ রে বাবা। চল্‌

দাঁড়া একটু, বলে অতসী এক হাত দিয়ে চৌবাচ্ছার পাঁচিল ধরে ঝুঁকে পড়ল জলের ওপর। পরক্ষণেই বললে, এটার নাম কি রে দাদা?

ডিপ টিউবওয়েল। নে চল্‌...

আর একটু। বলে সে আবার আগের মত ঝুঁকে পড়ল। জল ছিটিয়ে দিল দাদার দিকে। শীতল জলের স্পর্শে কেঁপে উঠল দাদা বোনের দিকে ফিরে বললে, এইজন্য ছোটমা তোকে মারে জানিস

বোনের তাতে বয়েই গেল। মনের আনন্দে দাদাকে জল ছেটাতে ছেটাতে হেসে লুটিয়ে পড়ল...

দেখাচ্ছি তোর মজা, বলে দাদা যেই দু পা এগিয়েছে অমনি অতসী নিস্তার পাওয়ার আশায় চৌবাচ্ছার সামনে ঝপাং করে ঝাঁপ দিয়ে দিল। বুঝতেই পারেনি ওখানে অতবড় গর্ত হয়ে আছে। ডুবে গেল। কী ঠান্ডা! সমস্ত শরীর কেঁপে উঠল। তারপর উঠে দাঁড়াল কোনোরকমে। নাকমুখ দিয়ে ঝোল বেরিয়ে এলো। 

দাদা তেড়ে এল। তুই জলে নামলি? ওঠ তাড়াতাড়ি। কত ঠান্ডা জানিস, এক্ষুণি জ্বর আসবে, ওঠ

অতসী ওঠার চেষ্টা করল কিন্তু পেরে উঠল না। অনেকটাই গভীর। বোনের অবস্থা দেখে দাদা গায়ের গেঞ্জিটা খুলে ঝাপ দিল জলে। দু তিনবারের চেষ্টায় বোনকে তুললো জল থেকে। তারপর নিজে উঠে খুলে রাখা গেঞ্জিটা দিয়ে বোনের মাথা মুছিয়ে দিল। ভিজে জামাটা খুলে দিয়ে বললে, চল। আজ দেখবি মজা। ছোটমা আসুক

অতসী চুপ করে থাকল। দোষ তারই। এরই মধ্যে তিন চারবার হ্যাচ্চো হয়ে গেছে। তবে রোদ্দুরটা বেশ মিষ্টি লাগছে। দূর থেকে জেঠুকে দেখতে পেয়ে দাদা তীর বেগে ছুটতে শুরু করল। সেও কম যায় না। দাদার পিছু ছাড়ল না। দাদা হাঁফাতে হাঁফাতে জেঠুকে সব বলে দিলে। জেঠু তাকাল তার দিকে। ভ্রু নাচিয়ে বললে, কি রে সব ঠিক বলছে?

অতসী মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে রইল। জেঠুই এগিয়ে এসে কোলে তুলে নিয়ে বললে, বেশ করেছিস। কোনো ভয় নেই। কিচ্ছু হবে না। বাড়ি গিয়ে ওষুধ দিয়ে দেব, সব ঠিক হয়ে যাবে

দূর থেকে দাদু বললে, তোর বড় পা হয়েছে। আজ আবার একটা অশান্তি। কতক্ষণ থাকবি জেঠুর কাছে? যখন ফেলে থেঁতলাবে জেঠু যাবে তো বাঁচাতে! 

ঘরে ফিরে টিভির সুইচ অন করতে না করতেই মায়ের গলা ভেসে এল। অতী সোনা, দিদি এখনও পড়ে আসেনি না, বলতে বলতে মা চলে এল ওপরে। বমমাইসি করোনি তো! 

অতসী ঘাড় দুলিয়ে জবাব দিল, না। মা আদর করে চুমা দিয়ে ভরিয়ে দিল। সে নির্বিকারভাবে বসে রইল। কারণ সে বুঝে গেছে মা প্রতিদিন অফিস থেকে ফিরে এমন করেই আদর করে। তারপরেই অনুষ্ঠানে ত্রুটি হলেই চুলের মুঠি ধরে কিল ঘুষি কষিয়ে দেয়। আজও মা প্রতিদিনের মত আদর করে ঘরের কাজে নেমে পড়ল

টিভি দেখতে দেখতে মাঝে মাঝেই আনমনা হয়ে পড়ছিল অতসী। গায়ে হাত দিয়ে দেখছিল জ্বর আসছে কিনা। সকালে দু একবার সেই যা হাঁচি হয়েছিল, জেঠুর ওষুধ খাওয়ার পর আর একবারও হাঁচি হয়নি। বেশ কিছুক্ষণ পর হঠাৎ তার মনে হল, মা বাবার কোনো সাড়াশব্দ নেই কেন! পা টিপেটিপে সিঁড়ি বেয়ে কিছুটা নেমে গিয়ে দেখতে পেল মা বাবা খুশিতে গল্প করছে। চোখে পড়ল সকালে রচনা লেখার খাতাটা। উঠে এল ওইরকমভাবে

শোবার সময় মা আদর করল। অবাক হয়ে গেল অতসী! অন্যদিন তো করে না। বললে, ওই রচনাটা তুই লিখেছিস! জেঠু লিখতে দিয়েছিল! সে ঘাড় নেড়ে বললে, হ্যাঁ

সারাদিন জেঠুর কাছে ছিলি! জেঠু চান করিয়ে দিয়েছে, বড়মা খাইয়ে দিয়েছে! 

সে কেবল ঘাড় নেড়ে যেতে লাগল। পাশ থেকে বাবা বলে উঠল, লেখাটা খুব ভাল হয়েছে। জেঠুকে দেখিয়েছিলি?

অতসী মনেমনে হেসে ফেলল। পাশ ফিরে শুলো। 

 

মায়ের ক্ষীণ কণ্ঠ ভেসে এল। অতী উঠে পড়্‌। অতী...আটটা বেজে গেল

    এই তো ঘুমালো, এরই মধ্যে সকাল হয়ে গেলো! চোখ খুলতে ইচ্ছা করছিল না অতসীর। খুললেই সকালের আলো এসে জানিয়ে দেবে আজ তোমার স্কুল আছে। ঘুমে চোখ জুড়ে আসছে তার...