ছড়া - কবিতা ৪ । ভাদ্র ১৪৩২





 আমি সেই ছোট্টটিই আছি













কিরণময় নন্দী

হুগলী, পশ্চিমবঙ্গ



 

ইচ্ছে করে পিছন ফিরি

এক লাফে বছর তিরিশ আগে,

সেই ছোটবেলার মিঠে বিকেল

আর আম কুড়ানো দুপুর-রোদে।


ঠা ঠা রোদে পুড়ছে মাটি

দুপুরবেলায় বন্ধ ঘরে মায়ের ঘুম,

জানালা দিয়ে ইশারা যেই

চুপি চুপি পালিয়ে মজার ধুম।


ফিরে এসে কত বকা

কঞ্চি লাঠির ছিপছিপে দাগ,

রাতের বেলায় গল্প শুনে ঘুমের দেশে

হারিয়ে যেত বকা -মারের রাগ।


বর্ষাতে সব টইটুম্বুর

আল-জমি মিলেমিশে একাকার,

দল বেঁধে জল ঝাঁপিয়ে স্কুলের পথে

স্মৃতিপটে সেই সুখ বারবার।


ঝকঝকে পুকুর জলে দল বেঁধে ঝাঁপ

ডুব দিয়ে ঝিনুক তোলার কাজ,

কাদা ছুঁড়ে লড়াই হতো কত

সব কিছু দগদগে স্মৃতির কোণে আজ।


পাড়ার কারও ভীষণ বকা

কিংবা লাঠি হাতে তাড়া,

থামতো তবেই জলকুস্তি আধঘন্টার

গামছা বেঁধে তবেই ঝিনুক নিয়ে বাড়ি ফেরা।


বিকেলবেলায় হইহুল্লোড় সবুজ মাঠে,

এক বল পায়ে কুড়ি-বাইশ জন,

দেদার হাসি দেদার মজা

আজ হয়তো মাঠেরও কষ্টে কাটে মন।


দুর্গাপুজোর জোড়া ঢাক

একখানা নতুন জামার গন্ধ,

চারদিন তো নিমেষে শেষ

বিসর্জনেই মন খারাপ ফের পড়াশোনার ছন্দ।


শীতের দিনে গুড় মাখিয়ে পুর পিঠে

আর তালের বড়া শেষ শ্রাবণে,

"বসন্ত উৎসব" বুঝিনি তখন

মন মাততো দোলের রঙে আর শিবগাজনে।


কালীপুজোয় ফুলঝুরি আর আমড়াআঁটি

ঘরে ঘরে মাটির প্রদীপ,

গাঁয়ের নদী দিয়ে বয়ে গেছে কত জল

পুজোতে আজ বিকট শব্দ আর বুক ঢিপঢিপ।


ছুটির ঘন্টা আজও বাজে পাশের ইস্কুলে

মাঝে মাঝে রাস্তায় ছেলের দল দেখি,

ডুব দিয়ে যাই তিরিশ বছর আগে

অনুভবে আমি সেই ছোট্টটিই আছি।